ঢাকাই খাবারের সর্ববৃহৎ আয়োজন

টেস্ট অফ ঢাকা

যুগ যুগ ধরে ঢাকা বঙ্গদেশের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে এই অঞ্চলের মানুষ ও বাঙালি জাতির ঐতিহ্যকে ধারণ করেছে। ঢাকার ঐতিহ্য মানে তাই মোটা দাগে বাংলাদেশের ঐতিহ্য। এই অঞ্চলের লোক-ঐতিহ্য ও খাদ্য সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে স্পেলবাউন্ড লিও বার্নেট এর উদ্যোগে পর পর দুই বার আয়োজন করা হয়। ঐতিহ্যবাহী খাবারের উৎসব, টেস্ট অফ ঢাকা। মূলত ঢাকার ৪০০ বছর উদযাপনের অংশ হিসেবে শুরু হওয়া এই উৎসব নতুন ঢাকার সঙ্গে পুরানো ঢাকার রন্ধন ঐতিহ্যের এক মেলবন্ধন নিয়ে সফলভাবে হাজির হয়েছিল। ঢাকার সবচেয়ে আলোচিত এই খাবারের উৎসব মহানগর ঢাকার স্বাদ রসনাসম্ভারকে নিয়ে আসে একই প্ল্যাটফর্মে।

ঢাকার বাহারি আর নামি-দামি সব খাবার এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ব্যাপক মরিচিতি লাভ করে এবং মন জয় করে নেয় বহু মানুষের। সকলের জনপ্রিয়তা আর বিপুল পরিমান চাহিদার কথা মাথায় রেখেই ঢাকার হাজী বিরিয়ানি, নারা বিরিয়ানিসহ বিখ্যাত এসব খাবারের দোকানগুলো ছড়িয়ে যায় ঢাকা শহরের আনাচে কানাচে। এলাকাভেদে খোলা হয়েছে নতুন নতুন শাখা।

এই আয়োজনকে আরও আকর্ষণীয় করতে ভরপুর খাওয়া-দাওয়ার সাথে যোগ হয়েছিল বৈশাখী আমেজ, ছিল চারদিনব্যাপী খাবারের উৎসব, বাউলগান, নাগরদোলা আর পুঁথিপাঠের আসর।

এই উৎসব যেমন ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবারের সাথে সব শ্রেণীর মানুষের এবং বিদেশী অতিথিদেরকে পরিচয় করিয়ে দেয়, তেমনি বিভিন্ন অঞ্চলভিত্তিক খাদ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো বৃহৎ পরিসরে প্রসারিত হওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।

বাঙালির আনুষ্ঠানিক ডোজে নাকি খাদ্য অপচয়ের চূড়ান্ত হতো- এমন কথা লিখে গিয়েছেন চীনা পরিব্রাজক হিউ এন সাং। তার দেখা ব্যঞ্জনের তালিকায় রয়েছে দই আর রাই সরষে দিয়ে রান্না করা পদ। যা খেয়ে অতিথিদের মাথা চাপড়াতে হতো তীব্র ঝালের আক্রমণে। 

টেস্ট অফ বাংলাদেশ

আয়োজনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

টেস্ট অফ বাংলাদেশ এর মাধ্যমে, গ্যাস্ট্রোনমি ট্যুরিজম কে প্রচার করে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ এর খাবারের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য কে তুলে ধরা এবং বাংলাদেশ কে এই প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পর্যটন কান্ট্রি ব্র্যান্ডিং প্রচার করা।

বাংলাদেশের রসনা ও বিখ্যাত খাবারসমূহকে একটি প্ল্যাটফর্মে এনে দেশের খাবারের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে তুলে ধরা।

টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট এর অন্যতম এজেন্ডা ক্ষুধার অবসান, খাদ্য নিরাপত্তা ও উন্নত পুষ্টিমান অর্জনে ভূমিকা রাখা।

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রসনা ও রন্ধনশৈলীর ইতিহাসের অনুসন্ধান।

বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও খাদ্যাভ্যাসের মাঝে মেলবন্ধন সৃষ্টি ও উদযাপন।

বাংলাদেশের খাদ্যাভ্যাস, রন্ধনশৈলী, উপাদান, প্রথা, তথা খাদ্য সংস্কৃতির পরিচয় উপস্থাপন।

বর্তমান প্রজন্ম ও বিশ্বের কাছে বাঙালি খাদ্য ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য ও ব্যাপকতা তুলে ধরা।

দেশের মধ্যে ও বাইরে দেশের বিখ্যাত রসনাগুলোর প্রতি আগ্রহ ও চাহিদা সৃষ্টি করা।

বাংলাদেশের খাদ্য ঐতিহ্য সংরক্ষণে সচেতনতা সৃষ্টি।

চন্দ্র লিখেছিলেন, “নদের ফটিক চাঁদ এখন আর মালালা ভোগে তেমন আধা নেই তার, ফাউল কারি ঠিকমতো তবিবড় হলো কি না এ নিয়ে তার বেজায় দুশ্চিন্তা”। ফাউল কারি আসলে মুরগির তরকারি। তখন হিন্দু সমাজ মুরগি যাওয়ার চল ছিলো না।